পেশা হিসেবে অনুবাদ কেন্দ্র

উদ্যোক্তা
অনুবাদ কেন্দ্র করতে হলে প্রথমেই আপনাকে হতে হবে একজন উদ্যোক্তা । তবে এক বা একাধিক ব্যক্তিও উদ্যোক্তা হতে পারেন।

মূলধন
অনুবাদ কেন্দ্রের জন্য মূলধন হিসেবে ন্যূনতম ৮-১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। যে টাকা আপনার অফিস স্পেস, আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় উপকরণের জন্য দরকার।

অনুমোদন
অনুবাদ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।
মূলত বাংলাদেশ সরকারের জনশক্তি মন্ত্রণালয় অনুবাদ কেন্দ্রের অনুমোদন দিয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন থেকে উদ্যোক্তার নামে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে। সঙ্গে অনুবাদ সংস্থার সনদপত্রসহ ৫০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে সংস্থার নামের জন্য জনশক্তি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই আপনি কাজ শুরু করতে পারেন।

জনবল
অনুবাদ কেন্দ্রের জন্য উদ্যোক্তা ছাড়াও একজন ব্যবস্থাপক, সর্বনিম্ন দুই জন অনুবাদক, একজন অফিস সহকারী ও বাধ্যতামূলক না হলেও একজন নোটারি পাবলিক রাখা যায়।

বেতন কাঠামো
ব্যবস্থাপক পদে ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা। অভিজ্ঞতার আলোকে বেতন কম বেশি হতে পারে। অথবা বেতনের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষেও নির্ধারণ করে নিতে হয়।

অনুবাদক
সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠানে অনুবাদক হিসেবে নিয়োগ পেলে প্রাথমিক অবস্থায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। তবে প্রতিষ্ঠান ভেদে বেতন ভিন্ন হতে পারে। আর অনুবাদক স্থায়ীভাবে ২০-২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন। কিংবা কমিশনে করলেও সমপরিমাণ টাকা উপার্জন করা সম্ভব। অফিস সহকারী : অনুবাদ কেন্দ্রের অফিস সহকারীকে ন্যূনতম ৭-৮ হাজার টাকা দেয়া যেতে পারে। অনুবাদ কেন্দ্রে মূল কাজটা করতে হয় অনুবাদকের। দিন দিন এ কাজের সুযোগ বাড়ছে। বিদেশী ভাষার ব্যাকরণ জেনে প্রচলিত ভাষারীতির মাধ্যমে অনুবাদ করতে পারলে কাজের অভাব হয় না। বিভিন্ন অনুবাদ কেন্দ্রে অনুবাদক হিসেবে খণ্ডকালীন বা সার্বক্ষণিক কাজ করার সুযোগ আছে।

অনুবাদকের যোগ্যতা
স্নাতক বা স্নাতকোত্তর হওয়া বাঞ্ছনীয়। অবশ্যই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সনদপত্র থাকতে হবে। একজন অনুবাদকের অন্যতম যোগ্যতা হল ভাষার সঠিক ব্যবহার জানা। তবে অনুবাদ কেন্দ্র আরবি, ইংরেজি, ফারসি, জার্মানি ও ইটালিসহ বেশ কয়েকটি দেশের ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।

কাজের স্বার্থে যোগাযোগ
কাগজপত্রের সত্যায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রসেসিংয়ের জন্য বিভিন্ন দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হয়।

কাজের ক্ষেত্র
ঢাকার মতিঝিলের দৈনিক বাংলা মোড়ের পূর্বাচল অনুবাদ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. মুতাছিম বিল্লাহ জানান, অনুবাদকদের সাধারণত দলিল, হলফনামা, নিকাহনামা, জীবনবৃত্তান্ত, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট, মামলা-মোকদ্দমার কাগজপত্র, এফিডেভিট, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ভিসা-সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ বাংলা থেকে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করতে হয়।

কাজের ক্ষেত্র ও চাহিদা
অনুবাদকের চাকরির বাজার বিস্তৃত। আমাদের দেশে ইংরেজি ও বাংলা অনুবাদকের চাহিদাই বেশি। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও দূতাবাস, এনজিও, জেলা ও উপজেলা শহরের অনুবাদ কেন্দ্রে অনুবাদকের অনেক চাহিদা রয়েছে।

অন্যান্য পদে যোগ্যতা
ব্যবস্থাপকের ক্ষেত্রে স্নাতকসহ স্নাতকোত্তর বা সমমানের হতে হবে। অফিস সহকারীর ক্ষেত্রে এসএসসি বা সমমান হলেই চলবে।

মাসিক আয়
একটি অনুবাদ কেন্দ্র থেকে মাসে সব খরচ ছাড়া ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা আয় হতে পারে।

কর্মদিবস
অনুবাদ কেন্দ্রে শুক্রবার ও সরকারি ছুটি ছাড়া সব দিনই কর্মদিবস হিসেবে গণ্য করা হয়।



লেখক: সালাহ উদ্দিন মাহমুদ


প্রকাশিত: যুগান্তর। জুলাই ২৩, ২০১৫, বৃহস্পতিবার : শ্রাবণ ৮, ১৪২২